রবিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২

খাপছাড়া

আরো একটা অকাজের দিনের পর রাত এসেছিল নিয়ম করেই। কিছু কাজ কিছু অকাজ সেরে আমি অনেক দিনের ই মত বসেছিলাম একটা প্রিয় সিনেমা নিয়ে : Harry Potter এর তৃতীয় গল্পটা ... প্রতিটি দৃশ্য জুড়ে লেগে থাকা আমার সেই কিশোর -বেলা, প্রতিটি প্রায়-মুখস্থ সংলাপ-এ সেই হারানো আবেগ অনুভব করছিলাম প্রান-ভরে--এই অবধি সব ঠিকঠাক ই ছিল; একটা সাধারণ দিনের একটা সাধারণ কিন্তু সুন্দর সমাপ্তি--কিন্তু বাদ সাধলো জানলার ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে যাওয়া ওই চাঁদ। আজকের দিন তার ই মত সাধারণ, নিপাট মধ্যবিত্ত চাঁদ--কিন্তু খড়খড়ির পাখির ফাঁক দিয়ে হঠাত তাকে দেখেই ভীষণ মন কেমন করে উঠলো; আলো নিভিয়ে জানলার খড়খড়ি খুলে গা এলিয়ে দিলাম বিছানায়--রাস্তার মরা পথ-বাতির আলোর সঙ্গে মিশে সেই এক-চিলতে চাঁদের আলো ভরে দিতে লাগলো আমার ঘর। এই বাতানুকুলতার বাধা পেরিয়ে এক-আকাশ রাত উপচে পড়ল আমার আনমনা বিছানায় ... মনে গুনগুন করে ভেসে এলো সেই চেনা মন-কেমন। 
নতুন কোনো অনুভূতি নয়। আর সব ভাবনার মত এটাও রবি-ঠাকুর শতাব্দী আগেই ছন্দে গেথে রেখে গেছেন--"হেথাও ওঠে চাঁদ আকাশ-পারে / পরশ মাগে আলো ঘরের দ্বারে / আমারে খুজিতে সে ফিরিছে দেশে দেশে / যেন সে ভালোবেসে চাহে আমারে".. তবু , জানা জিনিস নতুন করে জানার ই কি কম মজা? পড়া পংক্তি নতুন করে আবিষ্কার করে তাই চুপ করে শুয়ে থাকি--আর আরো একবার হতাশ বিস্ময়ে চেয়ে দেখি "যত দুরে দুরে যাবে বন্ধু", সেই চেনা শহর চেনা মুহূর্ত চেনা পিছুটান এর নাগাল ছাড়িয়ে যাওয়া আর হলো না--আর নিজের মধ্যবিত্ত মনের দিকে তাকিয়ে দেখি এই বারে বারে ফিরে আসা স্মরণ, এই ভীষণ পুরনো একঘেয়ে মন-কেমন--এগুলো ছাড়া আমি আমি নই। তাই এই অতীতের মালা ছিড়ে ছড়িয়ে পড়া মুহুর্তের অঞ্জলি ই দিলাম তোমায়, ভিনদেশী চাঁদ। পূর্নিমার সার্থকতা না থাক তোমাতে, নাই থাক শারদ-শশীর স্মিত সৌন্দর্যের ডালি, আমার সাধারনত্বের রাজ্যে তুমি চির-স্বাগত।

২টি মন্তব্য:

স্পিতি-যাপন : পর্ব ৪

আমাদের স্পিতি সফরের দশ দিন বেঁধে রাখতে চাই শব্দের নিগড়ে। সেই প্রয়াসের আজ চতুর্থ পর্ব। দিন ৪: ছিতকুল-...